ডিজিটাল যুগে মুসলমানের দায়িত্ব ও করণীয়: এক বিস্তৃত আর্টিকেল
আধুনিক সাহাবিদের পরিচয় এবং বাস্তবতা
আধুনিক যুগের কিছু মানুষ আছেন যাঁদের দেখলে মনে হয়, তারা যেন সাহাবিদের রূপে নিজেকে উপস্থাপন করছেন। সাদা পাঞ্জাবি, জোব্বা, টুপি আর দীর্ঘ দাঁড়ি — সব মিলিয়ে মনে হয় যেন উমর ইবনুল খাত্তাবের যুগ থেকে টাইম মেশিনে এসে দাঁড়িয়েছেন। কিন্তু বাস্তবতা হলো, এরা শুধু বাহ্যিক পোশাক ও ভঙ্গিমায় ধর্মের ছাপ রেখে দেয়, অথচ অন্তর্দৃষ্টিতে সম্পূর্ণ শূন্য।
এরা এক ধরনের আধুনিক ধর্ম ব্যবসায়ী, যারা ধর্মকে পুঁজি বানিয়ে নিজেদের স্বার্থ হাসিল করে। তাদের মূল লক্ষ্য ইসলাম নয়, ব্যবসা আর দানবাক্সে টাকার আয় বৃদ্ধি।
ধর্মীয় ওয়াজে তফাৎ ও তাফসিরের ভুল
এই আধুনিক ধর্ম
ব্যবসায়ীরা ওয়াজ করেন, কিন্তু ইলমের অভাব তাদের বক্তব্যকে
ক্ষতিগ্রস্ত করে। তারা তাফসিরে ভুল বোঝাপড়া করে,
যেমন ‘রুকু’
শব্দের সঠিক অর্থ জানেন না।
‘সাবাবে নুযুল’
সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে বিভ্রান্তিকর তথ্য দেন এবং মুখস্থ হাদিস ও কুরআনের বর্ণনা
দিয়ে ওয়াজকে পেশাদারিত্বে ভরা দেখানোর চেষ্টা করেন। তবে এর পেছনে থাকে ব্যক্তিগত
স্বার্থ ও দান সংগ্রহের লক্ষ্য।
সমাজে ধর্ম ব্যবসায়ীদের প্রভাব
তাদের চারপাশে থাকে অনুগত ভক্তগোষ্ঠী, যারা সোশ্যাল মিডিয়ায় তাদের প্রচার চালায় এবং সমালোচনাকে হিংসা ও বিরোধিতার নামে দমন করে। এই গোষ্ঠী মাদরাসায় চা বানায়, লাইভ ভিডিও করে, সমালোচকদের ‘অন্তরে রোগ’ বলেও তাদের মিথ্যা প্রশংসায় তোলপাড় সৃষ্টি করে।
অন্যদিকে, এই ব্যবসায়ীরা মিটিং করে কুরআনের নাম নিয়ে কিন্তু প্রকৃত জ্ঞান থেকে দূরে থাকে। তারা বড় বড় অনুদান, ব্যবসায়িক সম্পর্ক ও রাজনৈতিক ক্ষমতার পেছনে দৃষ্টি দেয়, যা ধর্মীয় আদর্শের সঙ্গে সামঞ্জস্যহীন।
কীভাবে চিনবেন ও সচেতন থাকবেন
উপসংহার: সত্যিকারের ধর্ম ও প্রজ্ঞার আহ্বান
বাইরের চকমকে
পোশাকে কেউ সাহাবি হয় না।
দাড়ি-টুপি দিয়ে
কোনো ব্যক্তির ধর্মীয় প্রজ্ঞা মাপা যায় না।
সাহাবিরা ছিলেন
সচ্চরিত্র, বিনয়ী,
ত্যাগী ও
সত্যবাদী।
আজকের আধুনিক ধর্ম
ব্যবসায়ীরা ধর্মকে বাণিজ্যের আড়ালে লুকিয়ে প্রকৃত ইসলাম থেকে দূরে সরিয়ে দিচ্ছেন।
সুতরাং, পোশাক নয়, হৃদয় বদলাতে হবে। ধর্ম ব্যবসা নয়, খাঁটি দীন বুঝতে হবে।