Dawatul Islam | মুসলিমের মুক্তি আল্লাহর গোলামিতে, জাগতিক শক্তিতে নয়

বুধবার, ০৮, অক্টোবর, ২০২৫ , ২২ আশ্বিন ১৪৩২

আপনার দাওয়াহের বার্তাকে পৌঁছে দিন বিশ্বময়
একটি প্রফেশনাল ও আধুনিক ইসলামী ওয়েবসাইটের মাধ্যমে
বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন
ইসলামী শিক্ষার সাথে থাকুন
ইসলামিক বক্তা, খতিব, শিক্ষক...গণের জন্য ওয়েবসাইট
এখানে ক্লিক করুন
সমাজসেবা কার্যক্রমে অংশ নিন
আপনার কষ্টার্জিত বয়ান আজীবন ধরে রাখুন
আরও জানুন
মুসলিমের মুক্তি আল্লাহর গোলামিতে, জাগতিক শক্তিতে নয়
০৭ জুন ২০২৫ ০১:০৯ মিনিট

আমাদের যুগে বিশ্ব জুড়ে নানা জাতি ও সম্প্রদায়ের মানুষের মুক্তির স্বপ্ন আর আকাঙ্ক্ষা দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। মুক্তি মানে হয়তো স্বাধীনতা, হয়তো জাতিগত ও ধর্মীয় সমতার নিশ্চয়তা, অথবা হয়তো কোনো শোষণ, অবিচার ও অত্যাচার থেকে মুক্তি। কিন্তু মুসলিম হিসেবে আমাদের মুক্তির ধারণা একেবারে ভিন্ন এবং গভীর। মুসলিমের মুক্তি আসবে শুধুমাত্র আল্লাহর গোলামিতে জীবন যাপনের মাধ্যমে, জাগতিক কোনো শক্তি বা পদ্ধতির দ্বারা নয়।

১. মুক্তির প্রকৃত ধারণা ইসলামে

মুক্তি শব্দের অর্থ অনেক। পার্থিব জগতের দৃষ্টিতে মানুষ যখন মুক্তি চায়, তখন মূলত অর্থনৈতিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক স্বাধীনতার কথা বলা হয়। কিন্তু ইসলামিক মুক্তির ধারণাটি এদের চেয়ে বহু গূঢ় ও ব্যাপক। মুক্তি হলো দুনিয়ার ফাঁকি থেকে, মনের শৃঙ্খল থেকে, অবৈধ সংযম থেকে, শয়তানের দাসত্ব থেকে, এবং সর্বোপরি আল্লাহর কাছে অবাধ আত্মসমর্পণের মাধ্যমে পূর্ণ পরিতৃপ্তির অবস্থা।

যখন মুসলিম আল্লাহর গোলাম (আব্দ) হয়, অর্থাৎ সবকিছুতে আল্লাহর ইচ্ছা ও বিধান মেনে চলে, তখন সে প্রকৃত মুক্তির স্বাদ পায়। কেননা সে বুঝতে পারে, জগতের সব ক্ষমতা, শক্তি, এবং সাফল্য অস্থায়ী, কিন্তু আল্লাহর সন্তুষ্টি ও নিকটতা চিরস্থায়ী।

২. জাগতিক শক্তির সীমাবদ্ধতা

জগতের শক্তি যেমন রাষ্ট্র, সেনাবাহিনী, অর্থনৈতিক সাম্রাজ্য বা প্রযুক্তি সকলই সাময়িক ও পরিবর্তনশীল। ইতিহাসে দেখা যায় বহু শক্তিশালী সাম্রাজ্য ভেঙে গেছে, বহু শাসক ক্ষমতা হারিয়েছে, এবং অনেক অর্থনৈতিক শক্তিও বিপর্যয়গ্রস্ত হয়েছে। জাগতিক শক্তি কখনোই মানুষের অন্তরের গভীরে স্থায়ী মুক্তি দিতে পারে না।

মুক্তি চাওয়া মানুষের জন্য ‘স্বাধীনতা’ বা ‘ক্ষমতা’ দরকার, কিন্তু সেই ক্ষমতা যদি দুনিয়ার প্রলোভনে ফেলে, তাহলে তা আসলে দাসত্বই সৃষ্টি করে। যেমন এক বিখ্যাত উক্তি, “যে দুনিয়াকে পছন্দ করে, সে দুনিয়াই তার দাস।” তাই জাগতিক শক্তি কখনোই মুক্তির চূড়ান্ত উৎস হতে পারে না।

৩. আল্লাহর গোলামির অর্থ ও তাৎপর্য

আল-কুরআন ও সুন্নাহ অনুযায়ী, একজন প্রকৃত মুক্ত মুসলিম হলেন যিনি আল্লাহর আদেশ ও বিধান মেনে তার দাসত্ব স্বীকার করেছেন। এই দাসত্ব শুধু বন্দুকের জোরে নয়, বরং হৃদয়ের গভীর আনুগত্য ও বিশ্বাস দ্বারা প্রতিষ্ঠিত।

আল্লাহর গোলাম হওয়ার মানে হল আত্মাকে শৃঙ্খলবদ্ধ করা, অবাধ ইচ্ছাকে নিয়ন্ত্রণে রাখা, নৈতিকতা ও আদর্শের পথে চলা। এতে ব্যক্তি পায় মানসিক শান্তি, আত্মিক শক্তি এবং পরম মুক্তি। কারণ, আল্লাহর প্রতি একান্ত আনুগত্য মানুষের অন্তরে এক রকম স্বাধীনতা এনে দেয়, যা দুনিয়ার কোনো শক্তি দিতে পারে না।

৪. ইসলামিক ইতিহাস ও দৃষ্টান্ত

ইসলামিক ইতিহাসে বহু মহান নেতা, চিন্তাবিদ ও সাধক দেখেছেন—যখন তারা আল্লাহর ইচ্ছার প্রতি সম্পূর্ণ আত্মসমর্পণ করেছিলো, তখনই তারা প্রকৃত মুক্তির স্বাদ পেয়েছে। হারুনুর রশিদ থেকে শুরু করে মুহাম্মদ বিন সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পর্যন্ত প্রত্যেকেই ছিলেন আল্লাহর পবিত্র গোলাম, আর সেই দাসত্ব তাদেরকে দুনিয়ার সব অশুভতা থেকে মুক্তি দিয়েছে।

অন্যদিকে, যারা কেবলমাত্র জাগতিক শক্তি সংগ্রহে ব্যস্ত থেকেছেন কিন্তু আল্লাহর আদেশ থেকে বিচ্যুত হয়েছেন, তারা বহুবার পরাজিত ও বিপর্যস্ত হয়েছেন। এটা আমাদের জন্য এক গভীর শিক্ষা।

৫. মুক্তি চাইলে করণীয়

আমাদের মুক্তি চাওয়া মানেই আল্লাহর পথে চলা, তাঁর বিধান মেনে জীবন সাজানো। অর্থাৎ:

  • তাওয়াক্কুল ও বিশ্বাস:সকল কাজের মধ্যে আল্লাহর ওপর নির্ভরতা ও বিশ্বাস রাখা।
  • আদর্শ জীবনের অনুসরণ:ইসলামিক শিষ্টাচার, ইবাদত, ও নৈতিকতা মেনে চলা।
  • দুনিয়ার প্রলোভন থেকে বিরত থাকা:অহংকার, লোভ, ক্ষমতার খেলায় পড়ে যাওয়া থেকে বিরত থাকা।
  • জ্ঞান অর্জন:আল্লাহর কথা ও রাসুলের আদর্শ বোঝার চেষ্টা।
  • সমাজসেবা ও ভালো কাজ:অন্যদের কল্যাণে নিজেকে নিয়োজিত করা।

৬. মুসলিমের মুক্তি কোনো অস্ত্র, সেনা, অর্থ বা রাজনীতির মঞ্চে নয়; মুক্তি আসবে আল্লাহর গোলামিত্ব স্বীকারের মধ্য দিয়ে। আল্লাহর প্রতি আনুগত্য ও আত্মসমর্পণ হলো মুক্তির একমাত্র প্রকৃত পথ। আমাদের দায়িত্ব হলো নিজের মন ও কর্মের শৃঙ্খলা করে, আল্লাহর ইচ্ছা মেনে, জীবনকে সাজানো যেন আমরা সত্যিকারের মুক্তির স্বাদ পেতে পারি।

একটি সুদীর্ঘ দুনিয়া পথে চলার চেয়ে, আল্লাহর পথে এক মুহূর্তের সত্যিকারের মুক্তি অনেক শ্রেয়। এই মুক্তি ছাড়া জীবনের কোনো অর্থ নেই, আর এটি ছাড়া জাগতিক শক্তি কেবল ভাসা মেঘের মতো, যা অবশেষে ঝড়ে উড়ে যায়।

আসুন, আমরা নিজেরাই সেই আল্লাহর আদর্শ গোলাম হই, কারণ তারই দাসত্বে মুক্তির সেরা তালি বাজে।

৭. মুক্তির ভ্রান্ত ধারণা ও আধুনিক যুগের ফাঁদ

আজকের বিশ্বে, মুক্তির ধারণাটি অনেকাংশে ভুলমত ধারণা ও আধুনিকতার আড়ালে বিকৃত হয়েছে। অনেকেই ভাবেন, অর্থ, ক্ষমতা, সামাজিক মর্যাদা বা রাজনৈতিক প্রভাবই হল মুক্তির চাবিকাঠি। কিন্তু এই ভুল ধারনা মানব জাতিকে আরও বেশি শিকলবদ্ধ করে। কারন, যখন আমরা জাগতিক শক্তিকে মুক্তির মূল উৎস মনে করি, তখন আমরা নিজের আত্মার শৃঙ্খল স্বীকার করছি।

বহু দেশে আমরা দেখি, যে দেশের মানুষ অর্থনৈতিকভাবে উন্নত হলেও মানসিক ও আত্মিকভাবে দাসত্বের শিকার। তারা ক্ষমতাবান হলেও নিজের মন ও জীবন নিয়ন্ত্রণে সক্ষম নয়। এই অবস্থাই হচ্ছে প্রকৃত দাসত্ব, যেখানে মানুষ নিজের ইচ্ছা, আত্মসম্মান ও নৈতিকতা হারিয়ে ফেলে।

৮. আল্লাহর গোলামির স্বাতন্ত্র্য ও পরম শান্তি

যখন একজন মুসলিম আল্লাহর গোলাম হয়, তখন সে নিজের আত্মার শৃঙ্খলা পায়। তার জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপ আল্লাহর নির্দেশনার প্রতি নিবেদিত থাকে। এতে তার মন শান্ত থাকে, কারণ সে জানে জীবনের সত্যিকারের মালিক কে।

এই বিশ্বাস তাকে দুনিয়ার অস্থায়ী সুখের খোঁজে নিক্ষেপ করে না, বরং অন্তরের শান্তি ও স্থিরতায় আবদ্ধ করে। আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনকে তার জীবনের প্রধান লক্ষ্য বানায়, যা তাকে দুনিয়ার কোন শোষণ বা অবিচার থেকে মুক্ত করে।

৯. সামাজিক ও নৈতিক মুক্তি

আল্লাহর গোলাম হওয়া শুধু ব্যক্তিগত মুক্তি নয়, এটি সামাজিক মুক্তিরও মূল। যখন মানুষ আল্লাহর আইন ও নৈতিকতা মেনে চলে, তখন সমাজে স্বচ্ছতা, ন্যায়বিচার ও পারস্পরিক সম্মান প্রতিষ্ঠিত হয়।

আধুনিক সমাজে আমরা দেখছি, সামাজিক দূর্নীতি, অসামাজিক কার্যকলাপ ও অসততা ছড়িয়ে পড়ছে। এর মূল কারণ হল জাগতিক লোভ-লালসা ও আত্মীয়তার ওপর অবিশ্বাস। আল্লাহর গোলাম হওয়া মানে হলো এসব থেকে মুক্তি পাওয়া এবং সত্য ও ন্যায়ের পথে চলা।

১০. জাগতিক শক্তির বিকল্প: আধ্যাত্মিক শক্তি

আধ্যাত্মিক শক্তি বা ইমানের শক্তি যেকোনো জাগতিক শক্তির চেয়ে শক্তিশালী। অনেক সময় দেখা যায় সামরিক শক্তি হেরে যায় অসামরিক বা নৈতিক শক্তির কাছে।

একজন সত্যিকার মুসলিম যিনি আল্লাহর গোলাম, তিনি তার হৃদয়ে এমন শক্তি ধারণ করেন যা তাকে যেকোনো পরিস্থিতিতে দৃঢ় থাকতে সাহায্য করে। এই শক্তি তাকে দুনিয়ার যন্ত্রণা, বিপদ, হতাশা থেকে মুক্ত করে এবং জীবনের প্রতি ইতিবাচক মনোভাব দেয়।

১১. মুক্তির পথে বাধা ও সমাধান

বহু মানুষ আল্লাহর গোলাম হতে চায় কিন্তু তারা জাগতিক শক্তির ফাঁদে আটকে থাকে। অহংকার, মিথ্যা গর্ব, দুনিয়াবাদী আকাঙ্ক্ষা, এবং অন্যান্য মানসিক বাঁধা তাদের পথ আটকে দেয়।

এ সমস্যা থেকে মুক্তি পেতেহলে:

  • নিজের অন্তর পরিচ্ছন্ন করা:আত্মসমালোচনা ও তাওবা করা।
  • সুন্দর আচরণ ও আদর্শ অনুসরণ:সমাজে নৈতিকতা ও সৎকর্মের প্রচার।
  • জ্ঞানার্জনে মনোযোগ:আল্লাহর আদেশ ও রাসুলের সুন্নাহ সম্পর্কে গভীর জ্ঞান অর্জন।
  • সঙ্গত পরিবেশ নির্বাচন:ভালো মানুষ ও আলেমদের সান্নিধ্যে থাকা।

১২. সমাপনী কথা

মুক্তির চূড়ান্ত উৎস আল্লাহর গোলামিতা। দুনিয়ার শক্তি যাই হোক না কেন, তা মানুষের অন্তরের নিঃসঙ্গতা ও দাসত্ব দূর করতে পারে না। প্রকৃত মুক্তি আসে যখন একজন মুসলিম নিজের স্বপ্ন, অহংকার ও শৃঙ্খল থেকে মুক্ত হয়ে আল্লাহর সন্তুষ্টির পথে চলতে শুরু করে।

আজকের বৈশ্বিক অস্থিরতা, সামাজিক ও রাজনৈতিক সংকটের মাঝে, আমাদের জন্য সবচেয়ে বড় নিদর্শন হলো আল্লাহর গোলাম হয়ে নিজের মুক্তি নিশ্চিত করা। কারণ আল্লাহর দাসত্বেই নিহিত মানুষের চূড়ান্ত মুক্তির রহস্য।

আসুন, আমরা সবাই নিজের অন্তরে সেই মুক্তির আলো জ্বালাই, আল্লাহর গোলাম হয়ে জীবনের প্রতিটি মুহূর্তকে আলোকিত করি। শুধু তখনই আসল মুক্তির স্বাদ পাব, যা পৃথিবীর কোনো শক্তি দিতে পারেনা।

১৩. জীবনের প্রকৃত লক্ষ্য নির্ধারণের গুরুত্ব

অনেক সময় মানুষ জীবনের লক্ষ্য নিয়ে বিভ্রান্ত হয়। সমাজে জনপ্রিয়তা, অর্থনৈতিক সাফল্য বা ক্ষমতাই যেন একমাত্র লক্ষ্য হয়ে দাঁড়ায়। কিন্তু এইসব জাগতিক লক্ষ্য হৃদয়কে পূর্ণতা দেয় না, বরং আত্মাকে জোরালো চাপের মুখোমুখি করে ফেলে।

আসল মুক্তি আসে তখন, যখন জীবনের প্রধান উদ্দেশ্য আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন। একজন মুসলিম যখন আল্লাহর গোলাম হয়ে জীবন কাটায়, তখন সে বুঝতে পারে নিজের জীবনের প্রকৃত লক্ষ্য কি—যা শুধুমাত্র ঈমান ও আমল দিয়ে পূরণযোগ্য। এই উপলবোধই জীবনের মানে ও অর্থ দেয়।

১৪. আধুনিক দুনিয়ায় গোলামির গুরুত্ব

আজকের প্রযুক্তি যুগে মানুষের সামনে বিস্তর সুযোগ আর চ্যালেঞ্জ রয়েছে। কিন্তু প্রযুক্তির অগ্রগতি সত্ত্বেও মানুষের আত্মা অনেক সময় শূন্য ও বিষণ্ণ থাকে। এর কারণ হল, প্রযুক্তির সুবিধার পেছনে সত্যিকারের মানবিক মূল্যবোধ ও আধ্যাত্মিকতা অনুপস্থিত।

আল্লাহর গোলাম হয়ে চলার মধ্য দিয়েই এই শূন্যতা পূরণ হয়। যখন একজন ব্যক্তি তার কর্ম, চিন্তা ও আচরণ আল্লাহর নির্দেশনা মেনে চালায়, তখন সে প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহার করতে পারে এবং তার জীবন অর্থপূর্ণ হয়।

১৫. আত্ম-স্বাধীনতা বনাম আল্লাহর গোলামিতা

আত্ম-স্বাধীনতা আমাদের চেতনার এক উচ্চ মাত্রা, কিন্তু অনেক সময় এটি ভুল ব্যাখ্যা হয়। অনেকেই মনে করেন আত্ম-স্বাধীনতা মানে নিজের ইচ্ছামতো কিছু করার অধিকার থাকা। কিন্তু প্রকৃত স্বাধীনতা আসে তখন, যখন আমরা নিজের অস্থির ইচ্ছা ও আবেগের দাসত্ব থেকে মুক্ত হয়ে আল্লাহর আদেশ পালন করি।

আল্লাহর গোলাম হওয়া মানে নিজের অস্তিত্বের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ আল্লাহর হাতে তুলে দেওয়া। এটাই হলো সত্যিকারের স্বাধীনতা, যেখানে আত্মা পায় শান্তি, স্থিরতা এবং মুক্তি।

১৬. দুনিয়ার অস্থায়ী শক্তির সীমাবদ্ধতা

অর্থ, ক্ষমতা, সমাজিক মর্যাদা বা সামরিক শক্তি—এসব জাগতিক শক্তি অস্থায়ী এবং পরিবর্তনশীল। সময়ের সাথে এগুলোকে হারানো বা বিসর্জন দেওয়া যায়। আর তাই জাগতিক শক্তির ওপর নির্ভর করে মুক্তি আশা মায়া ও স্বপ্নের মতো।

মহাপুরুষেরা বহু যুগে প্রমাণ করেছেন, যারা আল্লাহর দাস হয়েছেন, তারাই প্রকৃত মুক্ত। কারণ তারা জানেন তাদের অন্তরের মুক্তি জাগতিক দাসত্বের বাইরে।

১৭. আল্লাহর গোলামির মাধ্যমে আত্মিক উন্নতি

আল্লাহর গোলাম হতে মানে শুধু শৃঙ্খলা মেনে চলা নয়, বরং আত্মিক উন্নতির পথ গ্রহণ। এই পথ চলার মধ্যে রয়েছে ধৈর্য, কৃতজ্ঞতা, ক্ষমাশীলতা, ও ভালোবাসার শিক্ষা।

আত্মিক উন্নতি মানুষের মনকে শক্তিশালী করে এবং জীবনের প্রতিটি সমস্যা মোকাবেলা করার জন্য প্রস্তুত করে। আল্লাহর গোলামরা জানেন, জীবনের চূড়ান্ত বিজয় হল আত্মার মুক্তি, যা আসলেই শান্তি ও সুখের উৎস।

১৮. পরিশেষে: মুক্তির একমাত্র দিকপ্রদর্শক

যারা আল্লাহর গোলাম হয়েছেন, তারা জানেন মুক্তির একমাত্র পথ আল্লাহর কাছেই পাওয়া যায়। তারা অনুধাবন করেন, জীবনের নানান আঘাত, সংকট ও কষ্টের মাঝেও আল্লাহর অনুগ্রহ ও রহমতে জীবন আলোকিত হয়।

তাই, এই দুনিয়ার মায়া মোহ ও জাগতিক শক্তির লোভ ত্যাগ করে, আল্লাহর আদেশ ও সন্তুষ্টিকে জীবনের কেন্দ্রে প্রতিষ্ঠা করা জরুরি। কারণ আল্লাহর গোলাম হওয়াই প্রকৃত মুক্তির পথ এবং চিরস্থায়ী শান্তির উৎস।

সব সংবাদ