Dawatul Islam | গজল হুজুর বনাম ক্লাসিক হুজুর – ওয়াজ মাহফিল না লাইভ কনসার্ট?

বুধবার, ০৮, অক্টোবর, ২০২৫ , ২২ আশ্বিন ১৪৩২

আপনার দাওয়াহের বার্তাকে পৌঁছে দিন বিশ্বময়
একটি প্রফেশনাল ও আধুনিক ইসলামী ওয়েবসাইটের মাধ্যমে
বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন
ইসলামী শিক্ষার সাথে থাকুন
ইসলামিক বক্তা, খতিব, শিক্ষক...গণের জন্য ওয়েবসাইট
এখানে ক্লিক করুন
সমাজসেবা কার্যক্রমে অংশ নিন
আপনার কষ্টার্জিত বয়ান আজীবন ধরে রাখুন
আরও জানুন
গজল হুজুর বনাম ক্লাসিক হুজুর – ওয়াজ মাহফিল না লাইভ কনসার্ট?
০২ জুন ২০২৫ ০৯:৩৭ মিনিট

ওয়াজ মাহফিলের রকস্টার হুজুর!

এক সময় ওয়াজ মানেই ছিল চোখে জল আনা তিলাওয়াত, হৃদয় কাঁপানো হাদিস আর গলার কাঁপুনি তুলে দেওয়া উপদেশ। এখন? এখন ওয়াজ মানেই—“জলসায় ঢুকে বুঝবা ভাই, হুজুর গান গাইলে কেমন লাগে!”

মাহফিলের মাইকে ভেসে আসে,

🎶 “ভালোবাসা সাজিয়ে রাখবো আল্লাহর দরবারে…”
– আর হুজুর বলেন, “এ গানটা আগে রোমান্টিক ছিল, এখন আমি একে বানাইছি কোরআনিক!”

ভাইরে ভাই!
মাহফিলে এখন ফুঁ দিলে জিকির হয় না, হয় বিটবক্স। আর মাইকের শব্দে পাশের গ্রামে লোকজন ভাবে—“বিয়ের গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান বুঝি?”

হুজুর বলছেন,

“স্মৃতি চোখে জল আনে…”
তারপর থেমে হঠাৎ বললেন,
“ভাইরা, এ স্মৃতি যদি হয় গোনাহর, তয় চোখের পানি দিয়েন তাওবার। না হয় কইরা নিন রিকুয়েস্ট—জান্নাতের সিডি।”

আর জনতা? তারা এমন তন্ময় হয়ে শোনে, মনে হয় হুজুর না—স্টার জলসার হিরো।

ওয়াজের নতুন ফরমুলা:

🔸 শুরুতে হুজুর গান গাইবেন—
🎤 “তুই আমার জানের জান, আল্লাহর মানে মান।”
🔸 মাঝখানে করবেন কয়েকটা ভঙ্গিমা: চোখে চশমা তুলে, হাত নাড়িয়ে বলবেন—

“ভাইরা! কেয়ামত আসতেছে না, কেয়ামত নাচতেছে!”

🔸 শেষে বলবেন:

“যদি কেউ পাঁচ টাকা দেয়, আমি তার নামে গাই—
🎶 ‘তুমি আল্লাহ দিলে সবই হয় ভাই!’”

শ্রোতাদের প্রতিক্রিয়া?

শ্রোতারা কেউ কেউ বলেন, “হুজুরের কণ্ঠে মেলোডি আছে, একটু আরমান মালিক টাইপ।”
আরেকজন বলে, “হুজুর তো লাইভ কনসার্টে ওয়াজ করে, ইউটিউবের জন্য ঠিক আছে!”
কেউ পেছন থেকে ফিসফিস করে, “ওয়াজের বদলে কমেডি নাইট হইতো ভালো হইত।”

ধর্ম গেল কোথায়?

আসলে ধর্ম গেল হুজুরের গলায়, যেখানে ফিকাহর জায়গায় গাওয়া হয় ফোক গান।
যেখানে হাদিসের ব্যাখ্যার বদলে পাওয়া যায় “তুমি বিনা গোরে শান্তি নাই” টাইপ বয়ান।
আর ওয়াজ মাহফিল হয়ে ওঠে এক প্রকার মিউজিক্যাল কমেডি শো—রেফারেন্স সহ।


শেষ কথা:

আমরা গান শুনি, ওয়াজ শুনি, মজা পেতে চাই—এটা ঠিক। কিন্তু ধর্মের নামে যদি সার্কাস হয়, তবে ভবিষ্যতে কেউ ওয়াজ শুনতে আসবে না, বরং “টিকটক ওয়াজার” হয়ে উঠবে সমাজের গুরু।

তাই হুজুরদের প্রতি আহ্বান: ওয়াজে ওয়াজ থাকুক, গান না। সেলাই না হোক কমেডি।

ওয়াজের নতুন ধরন: ‘গান গাইলেই গরু জবাই হবে!’

গ্রামের ময়দানে আজ বড় মাহফিল। বিশাল স্টেজ, ঝলমলে লাইট, পেছনে ডিজিটাল ব্যানার—তাতে লেখা:
“আন্তর্জাতিক বয়ানকারী, হৃদয়ছোঁয়া গায়ক হুজুর আলহাজ্ব মাওলানা বেবি নূরানী সাহেব দা.বা.”

বয়ান শুরু হওয়ার আগেই হুজুরের মাইকে ডায়ালগ:

“ভাইরা ও বোনেরা! আজকের মাহফিলের সূচনা আমি করবো এক ধুনিয়া গজলের মাধ্যমে।”
🎤 তারপর শুরু—
“তুই না থাকলে আমার জান্নাতও শুন্য ভাই!”

এমন গভীর গান শুনে পাশের গ্রামের আবুল চাচা বললেন,

“আরে ভাই, এ তো রুমাল-চেপে-কান্না-ধরানো কথা!”

হুজুরের নতুন কৌশল:

🪩 গানের মাধ্যমে তওবা:
“যে গান গাইবে, সে গুনাহ থেকে দূরে যাবে।”
তবে গানের লাইনে পরিবর্তন:
🎶 “ওরে গরুর মালিক, করিস তওবা, না হলে জান্নাত হবে দোবা!”

🪑 জোকারি ওয়াজের সিটিং অ্যারেঞ্জমেন্ট:
পুরুষ এক পাশে, মহিলা এক পাশে, আর মাঝখানে হুজুর—সার্কাস রিংয়ের মতো ঘুরে ঘুরে বয়ান করছেন।

🎙️ হুজুর হঠাৎ একদম থেমে ডায়লগ মারলেন—

“ভাইরা, প্রেম কইরো না। প্রেমে বেহেশ্ত নাই। কিন্তু যদি ইসলামী স্টাইলে করো, হালাল প্রেম, তাহলে একটা মাইকে আমি তোমাদের নাম ঘোষণা করুম!”

আলহাজ্ব হুজুরের জনপ্রিয় প্রজেক্ট:

📀 ‘গজলের ফিতনা থেকে বাঁচার জন্য গজল শুনুন’—অ্যালবাম সিরিজ।
💰 ডোনেশন দিলে সিডি ফ্রি।
🕌 নামাজ পড়লে হুজুর বলবেন—“ও মাশা আল্লাহ, তুমি তো এখন গজলের গাজী!”

জনতা কী ভাবে?

👴 বৃদ্ধ নুরুল হক চাচা বললেন:
“আমি ৭০ বছর বয়সে এমন ওয়াজ শুনলাম, মনে হইতেছে গানের ইন্ডাস্ট্রি রিলিজিয়াস লাইসেন্স পাইছে।”

👦 তরুণরা বলে:
“হুজুর ভাইরে ফলো দেই, উনার গজল রিংটোন বানায়ছি!”

👳 এক ভক্ত বললেন:
“ওয়াজ মানে এখন শুধু উপদেশ না ভাই, বিনোদনও!”


উপসংহার:

এই রম্য সমাজের এক বেদনাদায়ক রূপ তুলে ধরছে—যেখানে ধর্মীয় জ্ঞান হ্রাস পেয়ে বিনোদনে পরিণত হচ্ছে, আর বিশ্বাসের জায়গা নিচ্ছে ভাইরাল ক্লিপ।
হুজুররা যদি ওয়াজে গান না গেয়ে কোরআনের সুরে ফিরে যান, তাহলেই মানুষ ফের ঈমানের গান শুনতে পারবে।


“তিন দিনের গজল ওয়াজ কোর্স – হুজুরদের জন্য স্পেশাল!”

নতুন নতুন হুজুরেরা এখন আর কিতাব খুলে বয়ান শুরু করেন না। আগে তারা গলার পরীক্ষা দেন—সুরে মধু না থাকলে আজকাল মাহফিলে ডাক পড়ে না।

তাই “আলহাজ্ব গজল মাওলানা ব্যান্ডু ভাই” খুলেছেন নতুন এক কোর্স:
🎓 “তিন দিনের ইনটেনসিভ গজল ওয়াজ ট্রেনিং – সবার জন্য ওপেন!”

প্রথম দিন: গান নির্বাচন ও রূপান্তর

🎶 “তুই আমার জানের জান…” → এইটা হুজুর বানান:
🎤 “আল্লাহ আমার প্রাণের প্রান, নবি আমার রূহের জান…”

🔸 ট্রেইনার বলেন:
“গানটা যেন শোনায় গজল, তবু গজলটা যেন শোনায় ওয়াজ!”

🔸 অতঃপর চর্চা চলে ২ ঘন্টা –
হুজুরদের দাঁড় করিয়ে রাখা হয় হাতে মাইক, পেছনে হারমোনিয়াম, আর সামনে পানির বোতল (কারণ গজল গাইলে গলা শুকায়)।

দ্বিতীয় দিন: ভঙ্গিমা ও হাউজমার্কা ডায়ালগ

🎭 হুজুরদের শেখানো হয় কিভাবে মঞ্চে দাঁড়িয়ে:

  • চোখ কপালে তুলে বলতে হবে: “এই জমানায় প্রেম মানেই পাপ, কিন্তু হালাল প্রেম মানেই বেহেশতের সাপ!”

  • কোমর দুলিয়ে বলতে হবে: “জান্নাতের টিকিট চাইলে, ভাই– ওয়াজে কান, ইউটিউবে লাইক দাও।”

🎙️ এক হুজুর গলা উঁচিয়ে চিৎকার দেন:

“ভাইরা, আজ যদি কাঁদেন—কাল জান্নাত হাসবে।”

তৃতীয় দিন: বাস্তব অনুশীলন (লাইভ স্টেজ রিহার্সাল)

⚡ এখানে হুজুররা দাঁড়ান ফ্ল্যাশিং লাইটের সামনে, দুই পাশে দুই জন “সাবহানাল্লাহ গ্রুপ” দিয়ে রেখেছে—তারা যখন তখন বলবে,

“সুবহানাল্লাহ হুজুর! আহা আহা! আবার শুনাইয়েন ভাই।”

🔊 ওয়াজ হয় এভাবে:

“ভাইরা, ভালোবাসা যদি হয় দুনিয়ার, তবে গুনাহ…
কিন্তু যদি হয় জান্নাতের, তবে…
🎵 ‘আল্লাহ তুমি জানো, কেমন করে আমি প্রেমে পড়েছি তোমায়…’”

📣 এক শ্রোতা চিৎকার করলো,

“হুজুর, আপনে না থাকলে ধর্মই পানশালা লাগতো ভাই!”


হুজুরদের সফলতা!

যারা কোর্স শেষ করেন, তারা পান:

🏅 “গজল হুজুর অব দ্য ইয়ার” সার্টিফিকেট
📀 বোনাস: “ইসলামি গান দিয়ে ঈমান বাঁচাও” নামক পেনড্রাইভ
📢 প্লাস লাইভ ওয়াজে চুক্তি: “বুক হুজুর, গানের সাথেই দোয়া!”


শেষ কথা (তবে হাসির শেষে ভাবার):

ধর্ম যদি হয়ে যায় মঞ্চ নাটক, আর ওয়াজ যদি হয় লিরিক্সে মোড়া গান—তাহলে আমরাই হারিয়ে ফেলছি সেই পবিত্র আলো, যার জন্য মাহফিল তৈরি হয়েছিল।

🎤 হুজুরগণ, ওয়াজে গান কমান—কোরআন বাড়ান।
📿 গানের স্টেজ না, কোরআনের মিম্বার হোক আমাদের ভরসা।

সব সংবাদ