Dawatul Islam | সূরা আল জিন-বাংলা উচ্চারণ, অর্থ ও ব্যাখ্যা

বৃহস্পতিবার, ০৬, নভেম্বর, ২০২৫ , ২২ কার্তিক ১৪৩২

সূরা আল জিন-বাংলা উচ্চারণ, অর্থ ও ব্যাখ্যা
২৯ এপ্রিল ২০২৪ ১০:০০ মিনিট

সূরার নাম : আল জিন

অর্থ : জিন জাতি

সূরা নং : ৭২

রুকু :

আয়াত: ২৮

সিজদা: ০

শব্দ:

পারা : ২৯

অক্ষর:

মক্কায় অবতীর্ণ

بِسْمِاللّهِالرَّحْمـَنِالرَّحِيمِ

শুরু করছি আল্লাহর নামে যিনি পরম করুণাময়, অতি দয়ালু।

নং

আরবি

উচ্চারণ

অনুবাদ

قُلْ أُوحِيَ إِلَيَّ أَنَّهُ اسْتَمَعَ نَفَرٌ مِّنَ الْجِنِّ فَقَالُوا إِنَّا سَمِعْنَا قُرْآنًا عَجَبًا

কুল্ ঊহিয়া ইলাইয়্যা আন্নাহুস্ তামা‘আ নাফারুম্ মিনাল্ জিন্নি ফাক্ব-লূ য় ইন্না-সামি’না- কুর আ-নান্ ‘আজ্বাবাঁ-।

বলুনঃ আমার প্রতি ওহী নাযিল করা হয়েছে যে, জিনদের একটি দল কোরআন শ্রবণ করেছে, অতঃপর তারা বলেছেঃ আমরা বিস্ময়কর কোরআন শ্রবণ করেছি;

 

يَهْدِي إِلَى الرُّشْدِ فَآمَنَّا بِهِ ۖ وَلَن نُّشْرِكَ بِرَبِّنَا أَحَدًا

ইয়াহ্দী য় ইর্লা রুশ্দি ফাআ-মান্না-বিহ্; অলান্ নুশ্রিকা বিরব্বিনা য় আহাদাঁও।

যা সৎপথ প্রদর্শন করে। ফলে আমরা তাতে বিশ্বাস স্থাপন করেছি। আমরা কখনও আমাদের পালনকর্তার সাথে কাউকে শরীক করব না।

وَأَنَّهُ تَعَالَىٰ جَدُّ رَبِّنَا مَا اتَّخَذَ صَاحِبَةً وَلَا وَلَدًا

অআন্নাহূ তা‘আ-লা-জ্বাদ্দু রব্বিনা-মাত্তাখাযা ছোয়া- হিবাতাঁও অলা-অলাদাঁ-।

এবং আরও বিশ্বাস করি যে, আমাদের পালনকর্তার মহান মর্যাদা সবার উর্ধ্বে। তিনি কোন পত্নী গ্রহণ করেননি এবং তাঁর কোন সন্তান নেই।

وَأَنَّهُ كَانَ يَقُولُ سَفِيهُنَا عَلَى اللَّهِ شَطَطًا

অআন্নাহূ কা-না ইয়াকুলু সাফীহুনা-‘আলাল্লা-হি শাত্বোয়াত্বোয়াঁও।

আমাদের মধ্যে নির্বোধেরা আল্লাহ তা’আলা সম্পর্কে বাড়াবাড়ির কথাবার্তা বলত।

وَأَنَّا ظَنَنَّا أَن لَّن تَقُولَ الْإِنسُ وَالْجِنُّ عَلَى اللَّهِ كَذِبًا

অআন্না-জোয়ানান্না য় আল্লান্ তাকু লান্ ইন্সু অল্ জ্বিন্নু ‘আলাল্লা-হি কাযিবাঁও।

অথচ আমরা মনে করতাম, মানুষ ও জিন কখনও আল্লাহ তা’আলা সম্পর্কে মিথ্যা বলতে পারে না।

 

وَأَنَّهُ كَانَ رِجَالٌ مِّنَ الْإِنسِ يَعُوذُونَ بِرِجَالٍ مِّنَ الْجِنِّ فَزَادُوهُمْ رَهَقًا

অআন্নাহূ কা-না রিজ্বা-লুম্ মিনাল্ ইন্সি ইয়া‘ঊযূনা বিরিজ্বা-লিম্ মিনাল্ জ্বিন্নি ফাযা-দূহুম্ রহাক্বাঁও।

অনেক মানুষ অনেক জিনের আশ্রয় নিত, ফলে তারা জিনদের আত্নম্ভরিতা বাড়িয়ে দিত।

وَأَنَّهُمْ ظَنُّوا كَمَا ظَنَنتُمْ أَن لَّن يَبْعَثَ اللَّهُ أَحَدًا

অআন্নাহুম্ জোয়ান্নূ কামা-জোয়ানান্তুম্ আল্লাইঁ ইয়াব্‘আছাল্লা-হু আহাদাঁও।

তারা ধারণা করত, যেমন তোমরা মানবেরা ধারণা কর যে, মৃত্যুর পর আল্লাহ তা’আলা কখনও কাউকে পুনরুত্থিত করবেন না।

وَأَنَّا لَمَسْنَا السَّمَاءَ فَوَجَدْنَاهَا مُلِئَتْ حَرَسًا شَدِيدًا وَشُهُبًا

অআন্না-লামাস্ নাস্ সামা-য়া ফাওয়াজ্বাদ্না-হা-মুলিয়াত্ হারসান্ শাদীদাওঁ অ শুহুবাঁ-।

আমরা আকাশ পর্যবেক্ষণ করছি, অতঃপর দেখতে পেয়েছি যে, কঠোর প্রহরী ও উল্কাপিন্ড দ্বারা আকাশ পরিপূর্ণ।

وَأَنَّا كُنَّا نَقْعُدُ مِنْهَا مَقَاعِدَ لِلسَّمْعِ ۖ فَمَن يَسْتَمِعِ الْآنَ يَجِدْ لَهُ شِهَابًا رَّصَدًا

অআন্না-কুন্না-নাকউদু মিন্হা-মাক্বা-‘ইদা লিস্সাম্‘ই; ফামাইঁ ইয়াস্তামি‘ইল্ আ-না ইয়াজ্বিদ্ লাহূ শিহা-বার রাছোয়াদাঁও।

আমরা আকাশের বিভিন্ন ঘাঁটিতে সংবাদ শ্রবণার্থে বসতাম। এখন কেউ সংবাদ শুনতে চাইলে সে জলন্ত উল্কাপিন্ড ওঁৎ পেতে থাকতে দেখে।

১০

وَأَنَّا لَا نَدْرِي أَشَرٌّ أُرِيدَ بِمَن فِي الْأَرْضِ أَمْ أَرَادَ بِهِمْ رَبُّهُمْ رَشَدًا

অ আন্না-লা-নাদ্রী য় আর্শারুন্ উরীদা বিমান্ ফিল্ র্আদ্বি আম্ আরা-দা বিহিম্ রব্বুহুম্ রশাদাঁও ।

আমরা জানি না পৃথিবীবাসীদের অমঙ্গল সাধন করা অভীষ্ট, না তাদের পালনকর্তা তাদের মঙ্গল সাধন করার ইচ্ছা রাখেন।

১১

وَأَنَّا مِنَّا الصَّالِحُونَ وَمِنَّا دُونَ ذَٰلِكَ ۖ كُنَّا طَرَائِقَ قِدَدًا

অআন্না-মিন্নাছ্ ছোয়া-লিহূনা অ মিন্না-দূনা যা-লিক্; কুন্না ত্বোয়ারা-য়িক্ব ক্বিদাদাঁও।

আমাদের কেউ কেউ সৎকর্মপরায়ণ এবং কেউ কেউ এরূপ নয়। আমরা ছিলাম বিভিন্ন পথে বিভক্ত।

১২

وَأَنَّا ظَنَنَّا أَن لَّن نُّعْجِزَ اللَّهَ فِي الْأَرْضِ وَلَن نُّعْجِزَهُ هَرَبًا

অআন্না-জোয়ানান্না য় আল্ লান্ নু’জ্বিযা ল্লা-হা ফিল্ র্আদ্বি অলান্ নু’জ্বিযাহূ হারাবঁও।

আমরা বুঝতে পেরেছি যে, আমরা পৃথিবীতে আল্লাহ তা’আলাকে পরাস্ত করতে পারব না এবং পলায়ন করেও তাকে অপারক করত পরব না।

১৩

وَأَنَّا لَمَّا سَمِعْنَا الْهُدَىٰ آمَنَّا بِهِ ۖ فَمَن يُؤْمِن بِرَبِّهِ فَلَا يَخَافُ بَخْسًا وَلَا رَهَقًا

অআন্না-লাম্মা-সামি’নাল্ হুদা-আ-মান্না-বিহ্; ফামাইঁ ইয়ু”মিম্ বিরব্বিহী ফালা- ইয়াখ-ফু বাখ্সাঁও অলা-রহাক্বঁও।

 

আমরা যখন সুপথের নির্দেশ শুনলাম, তখন তাতে বিশ্বাস স্থাপন করলাম। অতএব, যে তার পালনকর্তার প্রতি বিশ্বাস করে, সে লোকসান ও জোর-জবরের আশংকা করে না।

১৪

وَأَنَّا مِنَّا الْمُسْلِمُونَ وَمِنَّا الْقَاسِطُونَ ۖ فَمَنْ أَسْلَمَ فَأُولَـٰئِكَ تَحَرَّوْا رَشَدًا

অআন্না-মিন্নাল্ মুস্লিমূনা অমিন্নাল্ ক্ব-সিতূন্; ফামান্ আস্লামা ফাঊলা-য়িকা তার্হারও রশাদা-।

আমাদের কিছুসংখ্যক আজ্ঞাবহ এবং কিছুসংখ্যক অন্যায়কারী। যারা আজ্ঞাবহ হয়, তারা সৎপথ বেছে নিয়েছে।

১৫

وَأَمَّا الْقَاسِطُونَ فَكَانُوا لِجَهَنَّمَ حَطَبًا

অআম্মাল্ ক্ব-সিতুনা ফাকা-নূ লিজ্বাহান্নামা হাত্বোয়াবাঁও।

আর যারা অন্যায়কারী, তারা তো জাহান্নামের ইন্ধন।

১৬

وَأَن لَّوِ اسْتَقَامُوا عَلَى الطَّرِيقَةِ لَأَسْقَيْنَاهُم مَّاءً غَدَقًا

অআল্লাওয়িস্ তাক্ব-মূ ‘আলাতত্বোয়ারীক্বাতি লাআস্ক্বাইনা-হুম্ মা-য়ান্ গাদাক্ব-।

আর এই প্রত্যাদেশ করা হয়েছে যে, তারা যদি সত্যপথে কায়েম থাকত, তবে আমি তাদেরকে প্রচুর পানি বর্ষণে সিক্ত করতাম।

১৭

لِّنَفْتِنَهُمْ فِيهِ ۚ وَمَن يُعْرِضْ عَن ذِكْرِ رَبِّهِ يَسْلُكْهُ عَذَابًا صَعَدًا

লিনাফ্তিনাহুম্ ফীহ্; অমাইঁ ইয়ু’রিদ্ব্ ‘আন্ যিক্রি রব্বিহী ইয়াস্লুক্হু ‘আযা-বান্ ছোয়া‘আদাঁও।

যাতে এ ব্যাপারে তাদেরকে পরীক্ষা করি। পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি তার পালনকর্তার স্মরণ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়, তিনি তাকে উদীয়মান আযাবে পরিচালিত করবেন।

১৮

وَأَنَّ الْمَسَاجِدَ لِلَّهِ فَلَا تَدْعُوا مَعَ اللَّهِ أَحَدًا

অআন্নাল্ মাসা-জ্বিদা লিল্লা-হি ফালা-তাদ্‘ঊ মা‘আল্লা-হি আহাদাঁও।

এবং এই ওহীও করা হয়েছে যে, মসজিদসমূহ আল্লাহ তা’আলাকে স্মরণ করার জন্য। অতএব, তোমরা আল্লাহ তা’আলার সাথে কাউকে ডেকো না।

১৯

وَأَنَّهُ لَمَّا قَامَ عَبْدُ اللَّهِ يَدْعُوهُ كَادُوا يَكُونُونَ عَلَيْهِ لِبَدًا

অআন্নাহূ লাম্মা-ক্ব-মা ‘আব্দুল্লা-হি ইয়াদ্‘ঊহু কা-দূ ইয়াকূনূনা ‘আলাইহি লিবাদা-।

আর যখন আল্লাহ তা’আলার বান্দা তাঁকে ডাকার জন্যে দন্ডায়মান হল, তখন অনেক জিন তার কাছে ভিড় জমাল।

২০

قُلْ إِنَّمَا أَدْعُو رَبِّي وَلَا أُشْرِكُ بِهِ أَحَدًا

কুল্ ইন্নামা য় আদ্‘ঊ রব্বী অলা য় উশ্রিকু বিহী য় আহাদা-।

বলুনঃ আমি তো আমার পালনকর্তাকেই ডাকি এবং তাঁর সাথে কাউকে শরীক করি না।

২১

قُلْ إِنِّي لَا أَمْلِكُ لَكُمْ ضَرًّا وَلَا رَشَدًا

কুল্ ইন্নী লা য় আমুলিকু লাকুম্ দ্বোর্য়ারঁও অলা-রশাদা-।

বলুনঃ আমি তোমাদের ক্ষতি সাধন করার ও সুপথে আনয়ন করার মালিক নই।

২২

قُلْ إِنِّي لَا أَمْلِكُ لَكُمْ ضَرًّا وَلَا رَشَدًا

কুল্ ইন্নী লাইঁ ইয়ুজ্বীরানী মিনাল্লা-হি আহাদুঁও অলান্ আজ্বিদা মিন্ দূনিহী মুল্তাহাদান্।

বলুনঃ আল্লাহ তা’আলার কবল থেকে আমাকে কেউ রক্ষা করতে পারবে না এবং তিনি ব্যতীত আমি কোন আশ্রয়স্থল পাব না।

২৩

إِلَّا بَلَاغًا مِّنَ اللَّهِ وَرِسَالَاتِهِ ۚ وَمَن يَعْصِ اللَّهَ وَرَسُولَهُ فَإِنَّ لَهُ نَارَ جَهَنَّمَ خَالِدِينَ فِيهَا أَبَدًا

ইল্লা-বালা-গাম্ মিনাল্লা-হি অরিসা-লা-তিহ্; আমাইঁ ইয়া’ছিল্লা-হা অরসূলাহূ ফাইন্না লাহূ না-রা জ্বাহান্নামা খ-লিদীনা ফীহা য় আবাদা-।

কিন্তু আল্লাহ তা’আলার বাণী পৌছানো ও তাঁর পয়গাম প্রচার করাই আমার কাজ। যে আল্লাহ ও তাঁর রসূলকে অমান্য করে, তার জন্যে রয়েছে জাহান্নামের অগ্নি। তথায় তারা চিরকাল থাকবে।

২৪

حَتَّىٰ إِذَا رَأَوْا مَا يُوعَدُونَ فَسَيَعْلَمُونَ مَنْ أَضْعَفُ نَاصِرًا وَأَقَلُّ عَدَدًا

হাত্তা য় ইযা-রয়াও মা-ইয়ূ‘আদূনা ফাসাইয়া’লামূনা মান্ আদ্ব্‘আফু না-সিরঁও অআক্বল্লু ‘আদাদা-।

এমনকি যখন তারা প্রতিশ্রুত শাস্তি দেখতে পাবে, তখন তারা জানতে পারবে, কার সাহায্যকারী দূর্বল এবং কার সংখ্যা কম।

২৫

قُلْ إِنْ أَدْرِي أَقَرِيبٌ مَّا تُوعَدُونَ أَمْ يَجْعَلُ لَهُ رَبِّي أَمَدًا

কুল্ ইন্ আদ্রী য় আক্বরীবুম্ মা- তূ‘আদূনা আম্ ইয়াজ‘আলু লাহূ রব্বী য় আমাদা-।

বলুনঃ আমি জানি না তোমাদের প্রতিশ্রুত বিষয় আসন্ন না আমার পালনকর্তা এর জন্যে কোন মেয়াদ স্থির করে রেখেছেন।

২৬

عَالِمُ الْغَيْبِ فَلَا يُظْهِرُ عَلَىٰ غَيْبِهِ أَحَدًا

‘আ-লিমুল্ গইবি ফালা-ইয়ুজ্হিরু ‘আলা-গইবিহী য় আহাদান্।

তিনি অদৃশ্যের জ্ঞানী। পরন্ত তিনি অদৃশ্য বিষয় কারও কাছে প্রকাশ করেন না।

২৭

إِلَّا مَنِ ارْتَضَىٰ مِن رَّسُولٍ فَإِنَّهُ يَسْلُكُ مِن بَيْنِ يَدَيْهِ وَمِنْ خَلْفِهِ رَصَدًا

ইল্লা-মার্নিতাদ্বোয়া-র্মি রাসূলিন্ ফাইন্নাহূ ইয়াস্লুকু মিম্ বাইনি ইয়াদাইহি অমিন্ খল্ফিহী রছোয়াদাল্।

তাঁর মনোনীত রসূল ব্যতীত। তখন তিনি তার অগ্রে ও পশ্চাতে প্রহরী নিযুক্ত করেন

২৮

لِّيَعْلَمَ أَن قَدْ أَبْلَغُوا رِسَالَاتِ رَبِّهِمْ وَأَحَاطَ بِمَا لَدَيْهِمْ وَأَحْصَىٰ كُلَّ شَيْءٍ عَدَدًا

লিইয়া’লামা আন্ ক্বদ্ আব্লাগূ রিস-লা-তি রব্বিহিম্ অআহা-তোয়া বিমা-লাদাইহিম্ অআহ্ছোয়া-কুল্লা শাইয়িন্ ‘আদাদা-।

যাতে আল্লাহ তা’আলা জেনে নেন যে, রসূলগণ তাঁদের পালনকর্তার পয়গাম পৌছিয়েছেন কি না। রসূলগণের কাছে যা আছে, তা তাঁর জ্ঞান-গোচর। তিনি সবকিছুর সংখ্যার হিসাব রাখেন।

 

জিনরা কুরআন শুনছে এবং এতে তাদের বিশ্বাস

আল্লাহ তাঁর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে নির্দেশ দেন, তাঁর সম্প্রদায়কে জানাতে যে জিনরা কুরআন শুনেছে, এতে বিশ্বাস করেছে, এর সত্যতা স্বীকার করেছে এবং তা মেনে চলে। তাই আল্লাহ বলেন, “বলুন: “আমার কাছে ওহী করা হয়েছে যে, জিনদের একটি দল শুনেছিল। তারা বলল, ‘নিশ্চয়ই আমরা একটি চমৎকার তেলাওয়াত শুনেছি! এটি সঠিক পথে পরিচালিত করে" অর্থ, যা সঠিক এবং সাফল্যের দিকে। "এবং আমরা এতে ঈমান এনেছি এবং আমরা কখনো আমাদের পালনকর্তার সাথে কাউকে শরীক করব না।" এই অবস্থানটি (তারা যে গ্রহণ করেছিল) আল্লাহ যা বলেছেন তার অনুরূপ, "এবং যখন আমি আপনার দিকে জ্বিনদের একটি দল পাঠালাম যারা কুরআন শ্রবণ করে।" (46:29) আমরা ইতিমধ্যে এই বিষয়ে বর্ণিত হাদীসগুলি পেশ করেছি, তাই এখানে তাদের পুনরাবৃত্তি করার দরকার নেই। আল্লাহর উক্তি, “এবং তিনি আমাদের প্রভুর জাদ্দ উচ্চতর” সম্পর্কে আলী বিন আবি তালহা ইবনে আব্বাস থেকে বর্ণনা করেছেন যে তিনি আল্লাহর উক্তি, “আমাদের প্রভুর জাদ্দ” সম্পর্কে বলেছেন, “এর অর্থ হল, তাঁর কাজ, তাঁর আদেশ এবং তার শক্তি।" (আত-তাবারী 23:648) আদ-দাহহাক ইবনে আব্বাস থেকে বর্ণনা করেছেন যে তিনি বলেছেন, "আল্লাহর জাদ্দ হল তাঁর নেয়ামত, তাঁর শক্তি এবং তাঁর সৃষ্টির প্রতি তাঁর অনুগ্রহ।" মুজাহিদ ও ইকরিমা থেকে বর্ণিত হয়েছে যে, তারা বলেছেন, এটা (জাদ্দ) আমাদের পালনকর্তার মহিমা। কাতাদাহ বলেন, “তাঁর মহিমা, তাঁর মহিমা এবং তাঁর আদেশ সুউচ্চ। আস-সুদ্দি বলেছেন, "আমাদের প্রভুর আদেশ উচ্চতর।" আবু আদ-দারদা', মুজাহিদ এবং ইবনে জুরায়জ থেকে বর্ণিত হয়েছে যে, তারা বলেছেন, "তাঁর স্মরণ (যিকর) মহিমান্বিত।"

জিনরা নিশ্চিত করে যে আল্লাহর কোন স্ত্রী ও সন্তান নেই

আল্লাহ বলেন, “তিনি কোনো স্ত্রী বা পুত্র গ্রহণ করেননি।” অর্থ, সঙ্গী গ্রহণ ও সন্তান ধারণের থেকে তিনি অনেক উঁচুতে। এর মানে হল যে জ্বিনরা যখন ইসলাম গ্রহণ করেছিল এবং কুরআনে বিশ্বাস করেছিল তখন তারা স্ত্রী এবং একটি সন্তান (বা একটি পুত্র) গ্রহণ করার চেয়ে আল্লাহর মহিমা স্বীকার করেছিল। অতঃপর তারা বলল, “আর আমাদের মধ্যে মূর্খরা আল্লাহর বিরুদ্ধে এমন কথা বলত, যা ছিল মিথ্যার মধ্যে বড়”। মুজাহিদ, ইকরিমা, কাতাদাহ এবং আস-সুদ্দী, সবাই বললেন, “আমাদের মধ্যে মূর্খ” “তারা ইবলিসকে নির্দেশ করছিল।” "যা ছিল মিথ্যার বিশালতা।" আস-সুদ্দি আবু মালিক থেকে বর্ণনা করেছেন যে তিনি বলেছেন, "এর অর্থ সীমালঙ্ঘন।" ইবনে যায়েদ বললেন, "একটি বড় অন্যায়।" মূর্খ (সাফিহ) সেই শ্রেণীর প্রত্যেকের অর্থও বহন করে যারা দাবি করে যে আল্লাহর স্ত্রী বা পুত্র রয়েছে। এই কারণেই আল্লাহ এখানে বলেছেন, “আর আমাদের মধ্যে মূর্খরা ইসলাম গ্রহণের পূর্বে” অর্থ উচ্চারণ করত। "আল্লাহর বিরুদ্ধে যা ছিল মিথ্যার প্রবলতা।" অর্থ, মিথ্যা এবং একটি মিথ্যা। এভাবে আল্লাহ বলেন, "এবং সত্যই, আমরা ভেবেছিলাম যে, মানুষ ও জ্বীন আল্লাহর বিরুদ্ধে মিথ্যা কথা বলবে না।" অর্থ, ‘আমরা ভাবিনি যে, মানুষ ও জ্বীন আল্লাহর প্রতি মিথ্যাচারে স্বামী-স্ত্রী ও পুত্রকে আরোপ করে একে অপরের সাথে মিলিত হবে। সুতরাং আমরা যখন এই কুরআন শুনলাম তখন আমরা এতে বিশ্বাস স্থাপন করলাম এবং আমরা জানলাম যে, তারা (জিন ও মানুষ) এ ব্যাপারে আল্লাহ সম্পর্কে মিথ্যা বলেছে।

জ্বীনদের সীমালঙ্ঘনের কারণগুলির মধ্যে ছিল যে মানুষ তাদের কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করেছিল।

আল্লাহ বলেন, “এবং সত্যই, মানবজাতির মধ্যে এমন কিছু পুরুষ ছিল যারা জিনদের মধ্যে পুরুষদের কাছে আশ্রয় নিয়েছিল, কিন্তু তারা তাদের রাহকে বৃদ্ধি করেছিল। অর্থ, 'আমরা মনে করতাম মানবজাতির উপর আমাদের কিছু পুণ্যের মর্যাদা আছে কারণ তারা (পুরুষ) যখনই কোনো উপত্যকা বা প্রান্তর, খোলা মাঠ এবং অন্যান্য স্থানে বসতি স্থাপন করত তখনই তারা আমাদের কাছে আশ্রয় নিত।' প্রাক-ইসলামী জাহেলী যুগে আরবদের রীতি ছিল। তারা একটি নির্দিষ্ট স্থানের সর্বশ্রেষ্ঠ জ্বীনের কাছে আশ্রয় নিত যাতে তাদের কোন ক্ষতি বা অনিষ্ট না হয়। যেমন কেউ একজন মহান এবং শক্তিশালী ব্যক্তির সান্নিধ্যে তার শত্রুদের দেশে প্রবেশ করলে সে সেই ব্যক্তির সুরক্ষা এবং অভিভাবকত্ব চাইবে। তাই জ্বীনরা যখন দেখল যে, মানুষ তাদের ভয়ে তাদের কাছে আশ্রয় চাইছে, তখন তারা তাদের রাহক অর্থাৎ ভয়, আতঙ্ক ও ভীতি বাড়িয়ে দিল। তারা এটা করেছিল যাতে লোকেরা তাদের থেকে আরও বেশি ভয় পায় এবং তাদের কাছে আরও বেশি আশ্রয় চায়।

যেমন কাতাদাহ এই আয়াত সম্পর্কে বলেছেন, "কিন্তু তারা রাহকে তা বাড়িয়ে দিয়েছে।" অর্থ, পাপে, এবং জ্বীনরা তাদের বিরুদ্ধে আরও সাহসী ও সাহসী হয়ে ওঠে।" (আত-তাবারী ২৩:৬৫৫)

আত-সাওরী মনসুর থেকে, ইব্রাহিম থেকে, আয়াত সম্পর্কে বলেছেন: "কিন্তু তারা রাহাকে তাদের বৃদ্ধি করেছিল" এর অর্থ, "জিনরা সাহসী ছিল এবং তাদের বিরুদ্ধে উদ্ধত ছিল।"

আস-সুদ্দি বলেন, “একজন ব্যক্তি তার পরিবারের সাথে (ভ্রমণে) রওয়ানা করত যতক্ষণ না সে একটি জমিতে এসে বসতি স্থাপন করবে। অতঃপর তিনি বলবেন, 'আমি এই উপত্যকার মালিকের (জিনের) কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করছি জ্বীনদের থেকে, অথবা এতে আমার নিজের, আমার ধন-সম্পদ, আমার সন্তান বা আমার পশু-পাখির ক্ষতি হয়।' কাতাদাহ বলেন, "যখন তারা আশ্রয় প্রার্থনা করেছিল। আল্লাহর পরিবর্তে জ্বিনরা তাদের ক্ষতির দ্বারা পরাস্ত করবে।”

ইবনে আবি হাতেম ইকরিমা থেকে লিপিবদ্ধ করেছেন যে তিনি বলেছেন, “জ্বীনরা মানুষকে ভয় করত যেমন মানুষ তাদের ভয় করত বা তার চেয়েও খারাপ। তাই যখনই মানুষ কোন উপত্যকায় আসত তখনই জ্বীনরা পালিয়ে যেত। তাই জনগণের নেতা বলবেন, 'আমরা এই উপত্যকার অধিবাসীদের নেতার কাছে আশ্রয় চাই।' তাই জ্বীনরা বলল, 'আমরা তাদের কাছ থেকে যেভাবে পলায়ন করি, সেভাবে জ্বীনরা আমাদের কাছ থেকে পলায়ন করতে দেখছি।' মানুষের কাছাকাছি আসা এবং তাদের উন্মাদনা ও উন্মাদনায় আক্রান্ত করা। এভাবে আল্লাহ বলেন, “এবং সত্যই, মানবজাতির মধ্যে এমন কিছু পুরুষ ছিল যারা জ্বীনদের মধ্যে পুরুষদের কাছে আশ্রয় নিয়েছিল, কিন্তু তারা তাদের রাহকে বৃদ্ধি করেছিল। অর্থ, পাপে। আবু আলিয়া, আর-রাবী এবং যায়েদ বিন আসলাম, সবাই বলেছেন, "রাহক" "এর অর্থ ভয়ে।" মুজাহিদ বলেন, কাফেররা সীমালংঘন করে।

 

পোস্ট ট্যাগ:

Dawatul Islam,Dawatul Islam  Bangladesh,Definitions of dawatul islam,Dawatul Islam UK,দাওয়াতুল ইসলাম,দাওয়াতুল ইসলামের,দাওয়াতুল ইসলাম বাংলাদেশ,দাওয়াতুল ইসলাম ইউকে,বাংলা হাদিস,কোরআন ও হাদিসের আলোকে,কুরআন হাদিস বিষয়ক,কুরআন পাঠ,মানবজীবনে কুরআন হাদীস,কুরআন, হাদিস ও বিজ্ঞান,বাংলা কুরআন ও হাদীস

সব সংবাদ