ডিজিটাল যুগে মুসলমানের দায়িত্ব ও করণীয়: এক বিস্তৃত আর্টিকেল
মানুষ নামের জীবটি অনেক সময় নিজের স্বরূপ ভুলে যায়। সে ভুলে যায় যে, সে একজন ছোট ও দূর্বল প্রাণী। তার নিজস্ব কোন শক্তি নেই, বরং তার যাবতীয় শক্তি ও সামর্থ মহান আল্লাহর কাছ থেকেই গ্রহণ করে যিনি শক্তির আসল উৎস। অথচ এই মানুষ সেই উৎস থেকে নিজেকে বিচ্ছিন্ন করে নিয়ে অহংকারে ফুলে ফেপে উঠে। উন্মত্ততায় মেতে ওঠে, শক্তি প্রদর্শন করতে থাকে। তার মনে আত্মম্ভরিতা দানা বেঁধে ওঠে। এই অহংকার সেই শয়তানের কাছ থেকে সে লাভ করে যে শয়তান অহংকারের কারণেই ধ্বংস হয়েছে। তাই সে মানুষকে ধ্বংস করার জন্যে অহংকারকে তাদের উপর চাপিয়ে দেয়।
মানুষ আল্লাহ তায়ালার আয়াতকে নিয়ে বিতর্কে মেতে উঠে। অথচ আল্লাহর আয়াত হচ্ছে এমন জ্বলন্ত প্রমাণ যা প্রকৃতিকে প্রকৃতির ভাষায়ই প্রকাশ করে। বিতর্কের কারন হিসেবে সে নিজেকে এবং অন্য মানুষকে এই ধারণা দিতে প্রয়াস পায় যে, সে সন্তুষ্ট হতে পারেনি। সে আল্লাহর আয়াত সম্পর্কে নিশ্চিত নয় বলেই বিতর্ক করে। কিন্তু আল্লাহ পাক তাঁর বান্দাদের প্রকৃত অবস্থা সম্পর্কে যথাযথরূপে অবগত আছেন। কারণ, তিনি সর্বস্রষ্টা ও সর্বজ্ঞানী। বান্দাদের অন্তরের ভেদ সম্পর্কেও তিনি বিশেষ অবগত আছেন। তিনি যথার্থরূপেই জানেন যে, একমাত্র অহংকারের কারণেই মানুষ বিতর্কে জড়িয়ে পড়ে।
এই অহংকারই মানষকে এমন একটি বিষয়ে তর্ক-বিতর্ক করতে উদ্বুদ্ধ করে যা তর্কের উর্ব্ধে। অহংকারের বশবর্তী হয়েই মানুষ নিজের অস্তিত্ব ও বাস্তবতার তুলনায় অনেক বড় কিছু দাবী করার চেষ্টা করে, এমন স্থান দখল করতে চায় যার যোগ্য সে নয়। তাছাড়া কোনোরূপ দলীল প্রমাণ ও যুক্তি ছাড়াই সে বিতর্কে লিপ্ত হয়। এটাকে অহংকার ছাড়া আর কী বলা যেতে পারে? মানুষ যদি তার বাস্তবতা এবং এই সৃষ্টিজগতের বাস্তবতা উপলদ্বি করতে পারতো, তার ভূমিকা সম্পর্কে সচেতন থাকতো, তাহলে সে কখনও সীমালংঘন করার চেষ্টা করতো না।
সে যদি সন্তুষ্টচিত্তে উপলব্দি করতে পারতো যে, তার অস্তিত্ব অগণিত ও অসংখ অস্তিত্বের মাঝে সামান্য একটা অস্তিত্ব যা আল্লাহর নির্দেশেই পরিচালিত হচ্ছে এবং এই বিশ্বজগতে টিকে আছে তার অজানা ও অদৃশ্য নিয়মের অধীনেই। তেমনিভাবে মানুষ যদি বিশ্বাস করতো যে, এই বিশাল সৃষ্টি জগতে তার ভূমিকা তার অস্তিত্বের বাস্তবতা অনুসারেই নির্ধারণ করা আছে, তাহলে সে শান্তি পেতো এবং নিজেকে নিয়ে নিজের পারিপার্শ্বিকতাকে নিয়ে সুখ-স্বাচ্ছন্দেই জীবন যাপন করতে পারবো।
পাশাপাশি মহান আল্লাহ তায়ালার সামনে আত্মসমর্পণ করতো ও তার নির্দেশ অনায়াসে মেনে নিতো। অহংকার হচ্ছে নিকৃষ্ট ও ঘৃণ্য একটি পাপ। কারণ, মানুষ কেবল সেই সব বস্তু থেকেই আল্লাহর আশ্রয় কামনা করে যা নিকৃষ্ট ও ক্ষতিকর। বলা বাহুল্য, অহংকারের মাঝে এই বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান। কারণ, অহংকার খোদ অহংকারীকে অতিষ্ট করে তোলে। তার আশপাশের লোকজনকে কষ্টে পতিত করে। যে মনের বিতর অহংকার জন্ম নেয়, সে অন্তরকে যন্ত্রণায় কাতর করে তোলে এবং অন্যদের অন্তরকেও যন্ত্রণায় ভারাক্রান্ত করে ছাড়ে।
তাই এই অহংকার হচ্ছে অমঙ্গল ও অনিষ্ট যার কবল থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্যে আল্লাহর আশ্রয় কামনা করার অত্যন্ত জরুরী।