এক চোর এক রাতে মালিক বিন দিনারের বাড়ির দেয়াল ঘেঁষে ভেতরে প্রবেশ করতে সক্ষম হয়। চোরটি চুরির যোগ্য কিছুই না দেখে হতাশ হয়েছিল। মালিক নামাজে ব্যস্ত ছিলেন। বুঝতে পেরে তিনি একা নন, তিনি দ্রুত তার প্রার্থনা শেষ করলেন এবং চোরের মুখোমুখি হলেন।

ভয়ের কোনো চিহ্ন না দেখিয়ে মালিক শান্তভাবে শান্তির শুভেচ্ছা জানালেন এবং বললেন, "ভাই, আল্লাহ আপনাকে ক্ষমা করুন। আপনি আমার বাড়িতে প্রবেশ করেছেন এবং নেওয়ার মতো কিছুই খুঁজে পাননি, তবুও আমি চাই না আপনি কিছু সুবিধা না নিয়ে চলে যান। "

অন্য ঘরে গিয়ে জল ভর্তি জগ নিয়ে ফিরে এলেন। সে চোরের চোখের দিকে তাকিয়ে বললেন, "ওযু কর এবং দুই রাকাত সালাত আদায় কর, কেননা যদি তুমি তা করো, তাহলে তুমি আমার বাড়ি থেকে রওনা হবে তার চেয়েও বড় ধন নিয়ে যা তুমি প্রথমে চেয়েছিলে।"

মালিকের আচার-আচরণ ও কথায় বিনীত হয়ে চোর বলল, "হ্যাঁ, এটা সত্যিই উদার প্রস্তাব।"

ওযু করে দুই রাকাত নামায আদায় করার পর চোরটি বললো, "হে মালিক, আমি কিছুক্ষন থাকলে তুমি কি আপত্তি করবে, কারণ আমি আরো দুই রাকাত নামায পড়তে চাই?"

মালিক বললেন, "আল্লাহ তোমার জন্য এখন যে পরিমাণ নামাযের আদেশ দেন, সেটুকুই থাক।"

চোর সারা রাত মালিকের বাড়িতে কাটায়। তিনি সকাল পর্যন্ত প্রার্থনা করতে থাকেন। তখন মালিক বললেন, এখন চলে যাও ভালো থেকো।

কিন্তু চোরটি চলে যাওয়ার পরিবর্তে বলল, "আমি রোজা রাখার নিয়ত করেছি বলে আজ আমি তোমার সাথে এখানে থাকি তাহলে তুমি কি আপত্তি করবে?" "যতক্ষণ ইচ্ছা থাকো," মালিক বললেন।

চোরটি বেশ কিছু দিন অবস্থান করে, প্রতিটি রাতের শেষ সময়ে নামাজ পড়ে এবং দিনে উপবাস করে। অবশেষে যখন সে চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিল, চোর বলল, "হে মালিক, আমি আমার পাপের জন্য এবং আমার আগের জীবনযাপনের জন্য অনুতপ্ত হওয়ার দৃঢ় সংকল্প করেছি।" মালিক বললেন, এটা আল্লাহর হাতে।

লোকটি তার পথ সংশোধন করে এবং আল্লাহর প্রতি ন্যায়পরায়ণ ও আনুগত্যের জীবনযাপন করতে থাকে। পরে, সে আরেক চোরকে দেখতে পেল যে তাকে জিজ্ঞেস করল, "তুমি কি এখনও তোমার ধন খুঁজে পেয়েছ?"

তিনি উত্তর দিলেন, "আমার ভাই, আমি যা পেয়েছি তা হল মালিক বিন দিনার। আমি তার কাছ থেকে চুরি করতে গিয়েছিলাম, কিন্তু তিনিই আমার হৃদয় চুরি করেছিলেন। আমি সত্যিই আল্লাহর কাছে তওবা করেছি এবং আমি (তাঁর) দরজায় থাকব। করুণা ও ক্ষমা) যতক্ষণ না আমি তা অর্জন করি যা তাঁর আনুগত্যকারী, প্রেমময় বান্দারা অর্জন করেছে।"

[আল-মাওয়াইদ ওয়াল-মাজালিস: ৮৫]