ইসলামী রাষ্ট্র ও বিপ্লবের নৈতিক ভিত্তি: ধারনা, প্রস্তুতি ও ভুল বোঝাবুঝি

সূরা قُرَیۡشٍ কুরআনুল কারীমের ১০৬তম সুরা। সুরাটি মক্কায় অবতীর্ণ হয়েছে। এতে ৪টি আয়াত বিদ্যমান।
قُرَیۡشٍ কুরাইশ একটি গোত্রের নাম। নদীর ইবন কিনানার সন্তানদেরকে কুরাইশ বলা হয়। যারাই নদীর ইবন কিনানাহ এর বংশধর তারাই কুরাইশ নামে অভিহিত। কারও কারও মতে, ফিহর ইবন মালিক ইবন নাদর ইবন কিনানাহ এর বংশধরদেরকে কুরাইশ বলা হয়। তবে প্রথম মতটি বেশী শুদ্ধ। [কুরতুবী] হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “আল্লাহ তা'আলা ইসমাঈলের বংশধর থেকে কিনানাহকে, কিনানাহর বংশধর থেকে কুরাইশকে, কুরাইশ তেকে বনী হাশেমকে, বনী হাশেম থেকে আমাকে পছন্দ করেছেন।” [মুসলিম: ২২৭৬]
কুরাইশকে (قُرَیۡشٍ) কুরাইশ নামকরণ করার কারণ কারও কারও মতে, কুরাইশ শব্দটি تقريش থেকে এসেছে। যার অর্থ কামাই-রোযগার করা। তারা যেহেতু ব্যবসা করে কামাই-রোযগার করে জীবিকা নির্বাহ করত, তাই তাদের এ নাম হয়েছে। কারও কারও মতে, এর অর্থ জমায়েত করা বা একত্রিত করা। কারণ, তারা বিভিন্ন দিকে বিক্ষিপ্ত অবস্থায় ছিল, সর্বপ্রথম কুসাই ইবন কিলাব তাদেরকে হারামের চারপাশে জড়ো করেন, ফলে তাদেরকে কুরাইশ বলা হয়েছে। কারও কারও মতে, তা এসেছে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা থেকে। কারণ, তারা হাজীদেরকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করত। কোন কোন মতে, সাগরের এক বড় মাছের নামকরণে তাদের নাম হয়েছে। যে মাছ অন্য মাছের উপর প্রাধান্য বিস্তার করে থাকে। তেমনিভাবে কুরাইশ অন্য সব গোত্রের উপর প্রাধান্য পেয়ে থাকে। [কুরতুবী]
অনেকেই এই সুরাকে সুরা ফিলের অংশ বলে মনে করেন। কারণ এ দুই সুরার বক্তব্য পরস্পরের সম্পর্কিত। কুরাইশদের প্রতি মহান আল্লাহর নানা অনুগ্রহ ও দয়ার কথা স্মরণ করিয়ে দেয়া হয়েছে এ সুরায় যাতে তারা মহান আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞ হয় এবং কেবল তাঁরই ইবাদত করে যিনি কাবা ঘরের মালিক। কুরাইশদের মান-মর্যাদা কাঘা ঘরের ওসিলায় অর্জন করা সম্ভব হয়েছে। এবারে এ সুরার অনুবাদ শোনা যাক্। অসীম দয়াময় ও অনন্ত করুণাময় আল্লাহর নামে: ১.কুরাইশদের আসক্তির কারণে, (২) যা তাদের শীত ও গ্রীষ্মের সফরের প্রতি আছে, (৩) সুতরাং তাদের উচিত এ গৃহের প্রভুর ইবাদত করা। (৪) যিনি তাদের ক্ষুধায় আহার্য দান করেছেন এবং ভীতি হতে তাদের নিরাপত্তা দান করেছেন।
সুরা কুরাইশের উচ্চারণ ও অর্থ
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ
পরম কুরুনাময় অসীম দয়ালু আল্রাহর নামে শুরু করছি।
لِإِيلَٰفِ قُرَيْشٍ
লিঈলা-ফি কুরাইশ।
অর্থঃ কোরাইশের আসক্তির কারণে।
إِۦلَٰفِهِمْ رِحْلَةَ ٱلشِّتَآءِ وَٱلصَّيْفِ
ঈলা-ফিহিম, রিহলাতাশশিতাই ওয়াসসাঈফ।
অর্থ-আসক্তির কারণে তাদের শীত ও গ্রীষ্মকালীন সফরের।
فَلْيَعْبُدُوا۟ رَبَّ هَٰذَا ٱلْبَيْتِ
ফালইয়া‘বুদূরাব্বা হা-যাল বাঈত।
অর্থ- অতএব তারা যেন এবাদত করে এই ঘরের পালনকর্তার যিনি তাদেরকে ক্ষুধায় আহার দিয়েছেন।
ٱلَّذِىٓ أَطْعَمَهُم مِّن جُوعٍ وَءَامَنَهُم مِّنْ خَوْفٍۭ
আল্লাযী আতা‘আমাহুম মিন জূ‘ইওঁ ওয়া আ-মানাহুম মিন খাওফ।
অর্থ- এবং যুদ্ধভীতি থেকে তাদেরকে নিরাপদ করেছেন।