Dawatul Islam | সুরা কাফিরুনের উচ্চারণ, অর্থ, শানে নুযুল ও ব্যাখ্যা

বুধবার, ১৯, নভেম্বর, ২০২৫ , ৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

সুরা কাফিরুনের উচ্চারণ, অর্থ, শানে নুযুল ও ব্যাখ্যা
২৪ আগস্ট ২০২২ ০৩:৪৬ মিনিট

সুরা আল কাফিরুন কুরআনুল কারিমের ১০৯তম সুরা। সুরাটিতে ছয়টি আয়াত আয়াত রয়েছে। অত্র সুরাটি মক্কায় অবতীর্ণ হয়েছে।

সুরা কাফিরুন নাযিলের সময়কালঃ

আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা:), হাসান বরসী ও ইকরামা (রহ:) বলেন , এটি মক্কী সুরা । হযরত আবদুল্লাহ ইবনে যুবাইর বলেন , এটি মাদানী সুরা । রাইসুল মুফসসিরীন হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস ও কাতাদাহ (রা:) থেকে উভয় মতই পাওয়া যায়। অর্থাৎ তাঁরা একে মক্কী ও মাদানী উভয়ই বলেন। কিন্তু অধিকাংশ মুফাসসিরের মতে এটি মক্কী সূরা । তাছাড়া এর বিষয়বস্তুই এর মক্কী হবার কথা প্রমাণ করে।

বিষয়স্তু ও মূল বক্তব্যঃ

উপরোক্ত প্রেক্ষাপট বিশ্লেষণ করলে জানা যাবে , আসলে ধর্মীয় উদারতার উপদেশ দেবার জন্য সূরটি নাযিল হয়নি। যেমন কেউ কেউ মনে করে থাকেন বরং কাফেরদের ধর্ম, পূজা অনুষ্ঠান ও তাদের উপাস্যদের থেকে পুরোপুরি দায়িত্ব মুক্তি এবং তার প্রতি অনীহা , অসন্তুষ্টি ও সম্পর্কহীনতার ঘোষনা দেয়া আর এই সাথে কুফরী ধর্ম ও দীন ইসলাম পরস্পর থেকে সম্পূর্ণ আলাদা এবং তাদের উভয়ের মিলে যাবার কোন সম্ভাবনাই নেই একথা ঘোষণা করে দেয়ার জন্যই এ সূরাটি নাযিল হয়েছিল। যদিও শুরুতে এ কথাটি কুরাইশ বংশীয় কাফেরদেরকে সম্বোধন করে তাদের আপোস ফরমূলার জবাবে বলা হয়েছিল কিন্তু এটি কেবল এর মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই। বরং একথাগুলোকে কুরআনের অন্তরভূক্ত করে সমগ্র মুসলিম উম্মাহকে কিয়ামত পর্যন্ত এ শিক্ষা দেয়া হয়েছে, যে কুফরী ধর্ম দুনিয়ার যেখানেই যে আকৃতিতে আছে তার সাথে সম্পর্কহীনতা ও দায়িত্ব মুক্তির ঘোষণ তাদের কথা ও কাজের মাধ্যমে প্রকাশ করা উচিত।

দ্বিধাদ্বন্দ্ব ব্যতিতই তাদের একথা জানিয়ে দেয়া উচিত যে, দ্বীনের ব্যাপারে তারা কাফেরদের সাথে কোন প্রকার আপোস বা উদারনীতির আশ্রয় গ্রহণ করতে প্রস্তুত নয় । এ কারণেই যাদের কথার জবাবে এ সূরাটি নাযিল হয়েছিল তারা মরে শেষ হয়ে যাওয়ার পরও এটি পঠিত হচ্ছে। যারা এর নাযিলের সময় কাফের ও মুশরিক ছিল তারা মুসলমান হয়ে যাওয়ার পরও এর পাঠের ধারাবাহিকতা বহাল রয়েছে। আবার তাদের দুনিয়ার বুক থেকে বিদায় হবার শত শত বছর পর আজো মুসলমানরা এটি পড়ে চলেছে। কারণ কুফরী ও কাফেরের কার্যকলাপ থেকে সম্পর্কহীনতা ও অসন্তুষ্টি ঈমানের চিরন্তন দাবী ও চাহিদা ।

সুরা কাফিরুনের শানে নুযুলঃ 

হযরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলােইহি ওয়াসাল্লামকে ইসলাম প্রচার হইতে বিরত করার জন্য মক্কার কাফেরগণ সাধ্যমত চেষ্টা করে, কিন্তু কোনই ফল না হওয়ায় তারা হযরত আব্বাস (রা:) এর মারফত হযরত নবী সাল্লাল্লাহু আলােইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট আপােষ মীমাংসার ফর্মূলা হিসাবে এই প্রস্তাব পাঠাল যে, হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলােইহি ওয়াসাল্লাম যদি তাদের দেব-দেবীকে মান্য করেন, তবে তাহারা তারা আল্লাহকে মান্য করবে এবং তিনি যদি তাদের দেব-দেবীর মূর্তিসমূহের পূজা করেন, তবে তারাও তাঁর আল্লাহর এবাদত করবে ।

হযরত রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলােইহি ওয়াসাল্লাম অন্ততঃ এক বৎসরের জন্য হলেও এ চুক্তিতে রাজী হউন, এ আগ্রহও তারা প্রকাশ করল। তাদের এ হীন প্রস্তাবের উত্তরে আল্লাহ্ তায়ালা এ সুরা নাজিল করেন। এ সূরা হতে প্রমাণ হল যে, মিথ্যার সহিত সত্যের কখনও আপােষ হতে পারে না। -(তাফসীরে ইবনে কাসীর)

بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ

قُلْ يَا أَيُّهَا الْكَافِرُونَ

(১) বলে দাও , হে কাফেররা !

لَا أَعْبُدُ مَا تَعْبُدُونَ

(২) আমি তাদের ইবাদাত করি না যাদের ইবাদাত তোমরা করো৷

وَلَا أَنتُمْ عَابِدُونَ مَا أَعْبُدُ

(৩) আর না তোমরা তার ইবাদাত করো যার ইবাদাত আমি করি না৷

وَلَا أَنَا عَابِدٌ مَّا عَبَدتُّمْ

(৪) আর না আমি তাদের ইবাদাত করবো যাদের ইবাদাত তোমরা করে আসছো৷

وَلَا أَنتُمْ عَابِدُونَ مَا أَعْبُدُ

(৫) আর না তোমরা তার ইবাদাত করবে যার ইবাদাত আমি করি ৷

لَكُمْ دِينُكُمْ وَلِيَ دِينِ

(৬) তোমাদের দীন তোমাদের জন্য এবং আমার দীন আমার জন্য ৷

সূরা লাহাবের উচ্চারণ, অর্থ ও তাফসীর

সূরা ফালাকের উচ্চারণ, অর্থ ও শানে নুযুল

সূরা ফাতিহা ও নাসের বাংলা উচ্চারণ ও অর্থ


সব সংবাদ