Dawatul Islam | আহমেদাবাদের 'হ' অক্ষর

বৃহস্পতিবার, ০৯, অক্টোবর, ২০২৫ , ২৩ আশ্বিন ১৪৩২

আপনার দাওয়াহের বার্তাকে পৌঁছে দিন বিশ্বময়
একটি প্রফেশনাল ও আধুনিক ইসলামী ওয়েবসাইটের মাধ্যমে
বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন
ইসলামী শিক্ষার সাথে থাকুন
ইসলামিক বক্তা, খতিব, শিক্ষক...গণের জন্য ওয়েবসাইট
এখানে ক্লিক করুন
সমাজসেবা কার্যক্রমে অংশ নিন
আপনার কষ্টার্জিত বয়ান আজীবন ধরে রাখুন
আরও জানুন
আহমেদাবাদের 'হ' অক্ষর
১৭ আগস্ট ২০২২ ১০:৩৮ মিনিট

মুসলিম সভ্যতা ও ঐতিহ্য মুছে ফেলতে চতুর্মুখি ষড়যন্ত্র ছিল এবং আছে। আজকে আমরা কথা বলবো ভারতের আহমেদাবাদ নিয়ে। আহমেদাবাদের সঠিক উচ্চারণটা কী? এই শহরের দুটো উচ্চারণই চালু আছে - অ্যামদাবাদ ও আহমেদাবাদ - এবং পর্যবেক্ষকরা বলে থাকেন মূলত যারা শহরের মুসলিম শাসনে ঐতিহ্যটা মানতে চান না, তারাই আহমেদাবাদ থেকে 'হ'-টা বাদ দিয়ে দেন।

আজ থেকে সাতশো বছর আগে আহমেদ শাহ্-র প্রতিষ্ঠিত এই শহর কীভাবে ধীরে ধীরে এই 'হ' বর্জন করছে, সেটাই আলোচনার বিষয়। এই শহরের আসল নামটা কী? অভিজাত এলিসব্রিজ এলাকায় হয়তো লোককে বলতে শুনবেন অ্যামদাবাদ বা আমদাভাদ - কিন্তু সবরমতী নদী পেরিয়ে মুসলিম অধ্যুষিত তিন দরওয়াজা এলাকায় গেলেই পরিষ্কার শুনতে পাবেন আহমেদাবাদ।

বিমানবন্দরে লেখা 'আহমেদাবাদ', কিন্তু বাইরে বিলবোর্ডে 'আমদাভাদ' সিটি সাইটসিয়িংয়ের বিলবোর্ড। রহস্যটা পরিষ্কার হল গুজরাট ইউনিভার্সিটির রাষ্ট্রবিজ্ঞানের প্রধান, অধ্যাপক মুকেশ খটিকের কথায় - যিনি পরিষ্কার বললেন- রাজ্যে যারা একটু মুসলিম-বিরোধী মানসিকতার, তারা কিছুতেই শহরের নামে হ-টা উচ্চারণ করতে চান না। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। গুজরাট তার রাজনীতির শক্ত ঘাঁটি। ছবির উৎস,GETTY IMAGES ছবির ক্যাপশান, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। গুজরাট তার রাজনীতির শক্ত ঘাঁটি। তার সহকর্মী অধ্যাপক হিতেশ প্যাটেলও বলছিলেন, গুজরাটের ভেতরে এখন হ-বর্জিত অ্যামদাবাদ-টাই যেন স্বাভাবিক উচ্চারণ হয়ে উঠেছে।

প্রফেসর প্যাটেলের মন্তব্য, "স্থানীয়রা এখন সবাই আমদাবাদ বা অ্যামদাভাদ-ই বলেন। তবে যারা বাইরে থেকে আসেন, তাদের অনেকে এখনও আহমেদাবাদও বলেন।" "এই শহরের নামে এই H ফ্যাক্টর-টা খুব গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এই Hটা আপনি বলছেন কি না তা থেকে বোঝা যায় আপনি এই শহরের মুসলিম ঐতিহ্য বা সংস্কৃতিকে কোন চোখে দেখেন। এককালে তো এই আহমেদ শব্দটা পুরো বাদ দিয়ে শহরের নাম কর্ণাবতী রাখারও দাবি উঠেছিল, যদিও এখন আর সেটা তত বড় কোনও ইস্যু নয়"।

শাসক দল বিজেপির শীর্ষস্থানীয় নেতা মি প্যাটেল নিজের পরিচয় দেন বিজেপি-র 'কর্ণাবতী অঞ্চল প্রমুখ' হিসেবে, আহমেদাবাদ বা অ্যামদাবাদ কোনও শব্দই পারলে তিনি উচ্চারণ করেন না।

সুলতান আহমেদ শাহ্-রও আগে চালুক্য বংশের হিন্দু রাজা কর্ণদেও সবরমতীর এই নগরীর পত্তন করেছিলেন - তাই আহমেদাবাদের বদলে শহরের নাম কর্ণাবতী হওয়া উচিত, এ কথাও বিশ্বাস করেন অনেকেই।

আহমেদাবাদের ঐতিহ্যবাহী সিদি সাইদ জালি মসজিদ ছবির ক্যাপশান, ষোড়শ শতকে নির্মিত আহমেদাবাদের সিদি সাইদ জালি মসজিদ বিবিসি গুজরাটি বিভাগের ঋষি ব্যানার্জিও বলছিলেন, গুজরাটিরা এখন বেশির ভাগই শহরের নাম আমদাবাদ বলে থাকেন। তিনি বলেন, "গুজরাটিরা এই H-টাকে তত গুরুত্ব দেন না, তারা সবাই অ্যামদাবাদই বলেন।

আর এই শহরের পুরনো নাম হল কর্ণাবতী, কিন্তু মুসলিম শাসক আহমেদ শাহ রাজা কর্ণদেওকে যুদ্ধে হারিয়ে এই শহর বসিয়েছিলেন - তাই তাকে যারা সম্মান দেখাতে চান তারা এখনও আহমেদাবাদ বলে থাকেন।" এমন কী রাজ্যের জনসংখ্যার যে প্রায় দশ শতাংশ মুসলিম - তারাও আজকাল শহরের এই দুরকম নামই উচ্চারণ করছেন। "বহু মুসলিম পরিবার শত শত বছর ধরে গুজরাটে আছেন - তারাও কিন্তু এখন গুজরাটিতে আমদাভাদ আর হিন্দিতে আহমেদাবাদ, এভাবে বলে থাকেন"।

ভারতের অল্ট নিউজ পোর্টালের প্রতিষ্ঠাতা প্রতীক সিনহা-র জন্ম ও বেড়ে ওঠা এই শহরেই। অধ্যাপক হিতেশ প্যাটেল ছবির ক্যাপশান, অধ্যাপক হিতেশ প্যাটেল: " হ অক্ষর বাদ দিচ্ছেন কিনা তা থেকে বোঝা যায় শহরের মুসলিম ঐতিহ্যকে কোন চোখে দেখেন" তিনি আবার বলছিলেন, আহমেদাবাদ থেকে এই 'হ' বাদ যাওয়াটা ঠিক সাম্প্রদায়িক কারণে নয়, বরং এটা এক ধরনের গুজরাটিকরণ। 

সব সংবাদ